ফারাক্কায় পানি বণ্টন: সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ ভারত-বাংলাদেশ বৈঠক

ভারত ও বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে ফারাক্কায় গঙ্গা নদীর পানি মাপা সংক্রান্ত বৈঠক দুইদিন চলার পর সফলতার মুখ না দেখেই শেষ হলো। জার্মান ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলে বাংলা জানায়, বৈঠকের প্রথমদিকে সব ঠিকঠাক এগোলেও শেষপর্যন্ত দ্বিতীয় দফার আলোচনায় জটিলতা দেখা দেয়। প্রথম বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা একসঙ্গেই ফারাক্কায় গঙ্গার পানি মাপেন। প্রথম দিন গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনাও হয় এবং দুই দেশের প্রতিনিধি দলের নেতা বৈঠকের মিনিটসে সই করেন। দ্বিতীয় দিনের বৈঠক ছিল সীমান্তের নদীগুলো নিয়ে। সেই বৈঠকের পর মিনিটসে সই হয়নি। শুক্রবারের (৭ মার্চ) ওই বৈঠকে আলোচ্য ছিল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তথ্য ভাগাভাগি, বন্যা রিপোর্ট, সীমান্ত নদীগুলোকে কেন্দ্র করে দুই দেশের পরিকল্পনার বিষয়টি। আলোচ্য একাধিক বিষয়ের আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্তে না আসতে পারার কারণে বৈঠকের পর এখনো কোনো মিনিটসে সই করা হয়নি বলে ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতা মোহাম্মদ আবুল হোসেন এ বিষয়ে বলেছেন, পরিকল্পনা মতো আমাদের বৈঠক হয়েছে। এর থেকে বেশি কিছু এই মুহুর্তে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে কেউ মুখ খোলেননি। বৈঠক শেষ হওয়ার পর সাংবাদিক সম্মেলন হয়নি। এ বিষয়ে কেউ কোনো কথা বলেননি। সূত্রের বরাতে ডয়েচে ভেলে জানায়, ৭ মার্চের দ্বিতীয় দফার বৈঠকে বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ নদীগুলো মেরামতের কাজ করতে চেয়েছিল। কিন্তু ভারত এখনো তাতে সম্মতি দেয়নি। তারা বিষয়টি আগে খতিয়ে দেখতে চায়। সীমান্ত নদী হওয়ার কারণে এই মেরামতের জন্য দুই দেশের সম্মতি প্রয়োজন। গত বছর বন্যায় একাধিক সীমান্ত নদীতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং বেশি কিছু জায়গায় বাঁধ ভেঙে পড়েছে।
এ ছাড়া বৈঠকে দুই দেশের তথ্য ভাগাভাগির বিষয়টি আলোচনা হয়েছে এবং ভারত তাতে রাজি থাকলেও তা মিনিটসের খাতায় তোলা নিয়ে সমস্যা দেখা যায়। ফলে, শেষ পর্যন্ত মিনিটস-এ সই হয়নি।
পানিবন্টন চুক্তি মেনে গঙ্গার পানি ভাগাভাগি হচ্ছে কিনা তা দেখতে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ভারতে যায় প্রতিনিধিরা। এ বছর ৪ মার্চ ফারাক্কায় গিয়ে পানি মাপার পর বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা ভাগাভাগি নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানান।
যদিও এ সময় তারা আরও জানান, চলতি বছর গঙ্গায় পানি কম থাকায় দুই দেশই পানি কম পাচ্ছে।
এরপর, ৬ মার্চ ভারত বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে গঙ্গা জলবন্টন, গঙ্গায় কম জল এবং নদীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। মিটিং শেষে আলোচনার সারাংশে সই করেন ভারত ও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব শরদ চন্দ্র এবং মোহাম্মদ আবুল হোসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *