শিশুদের যেভাবে আদর করতেন মহানবী (সা.)

শিশু পবিত্রতার প্রতীক। শিশু মানবজাতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা আগামী পৃথিবীর কর্ণধার। কোরআনে শিশু শব্দের সমার্থক আরবি চারটি শব্দ মোট ৭৫ বার উল্লেখ হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) শিশুদের অনেক ভালবাসতেন। স্নেহ করতেন। তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেন। কোলে নিতেন। চুমু খেতেন। তাদের জন্য দোয়া করতেন।
নবীজি (সা.) শিশুদের চুমু খেতেন
শিশুদের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আচরণ ছিল অত্যন্ত কোমল ও বিনম্র। তিনি শিশুদের মনভরে আদর করতেন। চুমু খেতেন। আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) তাঁর নাতি হাসানকে চুমু খেলেন। সেখানে আকরা ইবনে হাবিস নামে এক সাহাবি বসা ছিলেন। হাসানকে চুমু খাওয়া দেখে তিনি বললেন, আমার দশটি সন্তান রয়েছে। আমি তাদের কাউকে চুমু খাইনি। নবীজি (সা.) তার দিকে তাকিয়ে বললেন, যে দয়া করে না, তার প্রতিও দয়া করা হবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৬৫১)
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘একবার নবীজি (সা.) দিনের বেলায় বের হলেন। আমার সঙ্গে কোনো কথা বললেন না। আমিও তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাইনি। তিনি বনু কায়নুকার বাজারে গেলেন। (সেখান থেকে ফিরে এসে) ফাতেমা (রা.)-এর ঘরের আঙিনায় গিয়ে বললেন, হাসান আছে এখানে? ফাতেমা (রা.) তাকে কিছুক্ষণ দেরি করালেন। নবীজি (সা.) দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন। বললেন, হে আল্লাহ, তুমি তাকে (হাসানকে) ভালোবাসো এবং তাকে যে ভালোবাসে তাকেও ভালোবাসো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২১২২)
আরেক হাদিসে আছে, আয়েশা (রা.) বলেন, ‘গ্রামের এক লোক নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, আপনারা শিশুদের চুম্বন করেন, কিন্তু আমরা ওদের চুম্বন করি না। নবী (সা.) বললেন, আল্লাহ যদি তোমার হৃদয় থেকে দয়া উঠিয়ে নেন, তাহলে তোমার ওপর আমার কি কোনো অধিকার আছে?’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯৯৮)
শিশুদের ভালোবাসতেন
আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, ‘একবার এক ব্যক্তি নবী (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হলো। লোকটির সঙ্গে একটি শিশুও ছিল। নবীজি (সা.) লোকটিকে বললেন, তুমি কি এই শিশুর প্রতি দয়া কর? সে বলল, হ্যাঁ। নবী (সা.) বললেন, তাহলে এই শিশুর প্রতি তুমি যতটুকু দয়া করবে, তারচে বেশি আল্লাহ তোমার প্রতি দয়া করবেন। তিনি দয়ালুর মধ্যে সবচে বড় দয়ালু।’ (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৩৭৭)
শিশুদের স্নেহ করতেন তিনি
রাসুলুল্লাহ (সা.) শিশুদের বেশ আদর-স্নেহ করতেন। সাহাবিদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন তাদের প্রতি কোমল আচরণের। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আমাদের ছোটদের প্রতি রহম করে না এবং আমাদের বড়দের অধিকারের প্রতি লক্ষ রাখে না, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৪৩)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *